করোনা পরবর্তী শারীরিক জটিলতা থেকে মুক্তি পেলেও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া আগে যেসব রোগে ভুগছিলেন সেগুলো এখনও রয়েছে বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক দলের সদস্য এবং দলের ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া করোনা পরবর্তী শারীরিক জটিলতা থেকে মুক্তি পেয়েছেন তবে তিনি পুরোপুরি সুস্থ এ কথা বলা যাবে না। এখনও তাকে চারজন ধরে হুইল চেয়ারে করে বাসা থেকে নিচে নামতে হয়।
বুধবার (১৮ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর মহাখালীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে খালেদা জিয়ার করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়া শেষে সাংবাদিকদের ডা. জাহিদ এ কথা বলেন।
ডা. জাহিদ বলেন, আগে উনার যেসব রোগ ছিল সেগুলো এখনো আছে। তাই তার উন্নত চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা বিদেশে নেওয়ার যে সুপারিশ করেছিলেন, আমরা মনে করি সেটি এখনো প্রয়োজন আছে।
খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে দোয়া চেয়ে বিএনপির এ ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, করোনার টিকা নেওয়ার পরও অনেকে আক্রান্ত হচ্ছেন। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও দেখা দেয়। তাই তিনি যেন ভালো থাকতে পারেন সেজন্য সবাই দোয়া করবেন।
খালেদা জিয়ার দ্বিতীয় ডোজ টিকা গ্রহণের সময় হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তার, মহিলা দলের নেত্রী সুলতানা আহমেদ, নিলুফার চৌধুরী মনি, ইয়াসমিন আরা, যুবদলের নেতা সাইফুল আলম নিরব, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, এস এম জাহাঙ্গীর, শফিকুল ইসলাম মিল্টন, নুরুল ইসলাম নয়ন, শরিফউদ্দিন জুয়েল প্রমুখ।
উল্লেখ্য, করোনামুক্ত হওয়ার ২ মাস ১৩ দিন পর গত ১৯ জুলাই করোনার টিকার প্রথম ডোজ নেন বিএনপি চেয়ারপার্সন। ওইদিন চিকিৎসকদের পরীক্ষানিরীক্ষা শেষে বিকেল ৪টায় রাজধানীর গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালের টিকা কেন্দ্রে তিনি মডার্নার টিকা নেন।
তিনি গত ৯ জুলাই ‘সুরক্ষা’ ওয়েবসাইটে টিকার জন্য নিবন্ধন ফরম পূরণ করেন। ৯ দিন পর টিকা নেওয়ার নির্ধারিত তারিখ উল্লেখ করে তাকে এসএমএস দেওয়া হয়।
চলতি বছর ১৪ এপ্রিল জিয়ার শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। প্রথমে বাসায় থেকেই চিকিৎসা নেন তিনি। পরে নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে ২৭ এপ্রিল তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পরে গত ৯ মে তার করোনা পরীক্ষায় ‘নেগেটিভ’ আসে। তারপরও শারীরিক সমস্যা থাকায় প্রায় দেড় মাস তাকে হাসপাতালে থাকতে হয়।
সেখানে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। শ্বাসকষ্টের কারণে মাঝে কিছুদিন তাকে সিসিইউতেও রাখা হয়।
৫২ দিনের চিকিৎসা শেষে ১৯ জুন রাতে গুলশানের বাসা ফিরোজায় ফেরেন তিনি। এতদিন বাসায় থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি।
দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বেগম জিয়া গত বছরের ২৫ মার্চ শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি পান। এরপর তার মুক্তির মেয়াদ তিন দফা বাড়ানো হয়।
আরও নিউজ দেখুনঃ