ঠাকুরগাঁও থেকেও দেখা যাচ্ছে কাঞ্চনজঙ্ঘা , হিমালয় পর্বতমালার অংশ কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যাচ্ছে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের বুড়িরবাঁধ থেকে। শীতের সকাল সাড়ে ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে ঠাকুরগাঁও থেকে দেখা যাচ্ছে বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ পর্বত কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়া। ভারতের সিকিম ও নেপালের সীমান্তঞ্চলে অবস্থিত এ পর্বতের চূড়া অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে নভেম্বর-ডিসেম্বর-জানুয়ারি পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৩ থেকে ৪ মাস পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁওয়ে দেখা যায়।
জানা যায়, বিগত ২০১৩ সালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের বুড়িরবাঁধ এলাকা থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা চূড়ার ছবি প্রথম ক্যামেরাবন্দি করেন ফটোগ্রাফার রেজাউল হাফিজ রাহী। এরআগে শুধু পঞ্চগড় থেকে বিশেষ একটা সময়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যেত।
বুড়িরবাঁধ এলাকার আকবর হোসেন ও শরিফুল ইসলাম বলেন, এর আগের বছরও এ বুড়িরবাঁধ থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা পাহাড় দেখছি। এইবার গত কিছুিদন থেকে দেখা যাচ্ছে তবে সকাল সাড়ে ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে। সকাল ১০টা পর্যন্ত বেশ ভালো দেখা যায়। তারপর আস্তে আস্তে ঝাপসা হতে থাকে। তবে শেষ বিকেলে সূর্যকিরণ আবার যখন তির্যক হয়ে পড়ে বরফের পাহাড়ে তখন অনিন্দ্য সুন্দর হয়ে ধরা দেয় কাঞ্চনজঙ্ঘা।
বুড়িরবাঁধ এলাকার রহমত আলী বলেন, আমি অপেক্ষায় থাকি প্রতিবছর এ পাহাড়টা দেখার জন্য। আমাদের ঠাকুরগাঁও থেকে দেখা যায়। গত বছর শীত বেশি থাকায় কাঞ্চন-জঙ্ঘার চূড়া ভালোভাবে দেখা যায়নি। তবে এবার শীত কম থাকায় চূড়াটি স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। ফটোগ্রাফার রেজাউল হাফিজ রাহী বলেন, ২০১৩ সালে বুড়িরবাঁধ এলাকায় পাখির ছবি তুলতে গিয়ে প্রথম কাঞ্চন-জঙ্ঘার সর্বোচ্চ চূড়ার ছবিটি ক্যামেরাবন্দি করি। এরপর তা ফেসবুকে পোস্ট করি। এরপর থেকেই মানুষ জেনেছে শুধু পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া থেকে নয়, ঠাকুরগাঁও থেকেও কাঞ্চন-জঙ্ঘা চূড়া দেখা যায়। কাঞ্চন-জঙ্ঘা দেখার জন্য বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ প্রতিনিয়ত আসে ঠাকুরগাঁও জেলায়।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ইএসডিও’র নির্বাহী পরিচালক ড. মুহম্মদ শহীদ উজ জামান জানান, শহরের গোবিন্দগড়ে অবস্থিত আমাদের অফিসের ৫তলা ভবন থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বত সুন্দরভাবে দেখা যায়। সেজন্য ভবনের উপরে আলাদাভাবে ছাদ তৈরি করেছি শুধু কাঞ্চন-জঙ্ঘা দেখার জন্য যেন অফিসের স্টাফরা মনরোম পরিবেশে উপভোগ করতে পারেন। আর শীতের সকালে এ নয়নাভিরাম দৃশ্যই প্রায়ই পরিবার নিয়ে উপভোগ করি আমরা বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক মাহাবুবুর রহমান বলেন, কাঞ্চন-জঙ্ঘা আবার ঠাকুরগাঁও থেকে দেখা যাচ্ছে। ঠাকুরগাঁওয়ে যোগ দেওয়ার পর জেনেছি এখান থেকেও কাঞ্চন-জঙ্ঘার চূড়া দেখা যায়, নিজেও সেই দৃশ্য উপভোগেরর চেষ্টা করছি। চমৎকার ও অপূর্ব সেই দৃশ্য। নিজের চোখকে বিশ^াস করা যায় না এতটাই অপূর্ব। তবে এ যে এতদূর হতেও শীতকালে কাঞ্চন-জঙ্ঘা পর্বত দেখা যায় তার জন্য এখানে উচু কোন স্থাপনা ও সেই স্থাপনার সাথে শিশুপার্ক, বিনোদন কেন্দ্র ও ক্যান্টিন গড়ে উঠতে পারে বলেও জানান তিনি।
আরও দেখুনঃ