চট্টগ্রামে টানা দশদিন করোনার সংক্রমণ ৫ শতাংশের নিচে

চট্টগ্রামে একটানা দশদিন করোনার সংক্রমণ হার ৫ শতাংশের নিচে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার সংক্রমণ নতুন করে ৩২ জন আক্রান্ত হয়েছে। সংক্রমণ হার ২ দশমিক ০৯ শতাংশ। এ সময়ে এক রোগির মৃত্যু হয়েছে। চট্টগ্রামে করোনার হালনাগাদ পরিস্থিতি নিয়ে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রেরিত আজকের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায়।

রিপোর্টে জানা যায়, ফৌজদারহাট বিআইটিআইডি, কক্সবাবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে নগরীর ছয়টি ল্যাবে চট্টগ্রামের ১ হাজার ৫২৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে নতুন ৩২ জন বাহকের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ২২ জন এবং পাঁচ উপজেলার ১০ জন। জেলায় মোট আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১ লাখ ১ হাজার ৫৯৪ জনে। করোনার সংক্রমণ মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৭৩ হাজার ৫৮৯ জন ও গ্রামের ২৮ হাজার ৫ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে মিরসরাইয়ে ৪ জন, হাটহাজারী ও বাঁশখালীতে ২ জন করে এবং  রাউজান ও বোয়ালখালীতে ১ জন করে রয়েছেন।

চট্টগ্রামে টানা দশদিন করোনার সংক্রমণ ৫ শতাংশের নিচে

গতকাল করোনার সংক্রমণ এ মৃত্যুবরণকারী একমাত্র রোগি শহরের বাসিন্দা। জেলায় এখন মোট মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ২৯০ জন। এর মধ্যে শহরের ৭১২ জন ও গ্রামের ৫৭৮ জন। আরোগ্যলাভ করে ৪১ জন। ফলে জেলায় মোট আরোগ্য লাভকারীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৮৬ হাজার ৬০৯ জনে। এদের ১০ হাজার ৫২৫ জন হাসপাতালে ও ৭৬ হাজার ৮৪ জন বাসায় চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন। আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টাইনে গতকাল যুক্ত হন ৯৬ জন, ছাড়পত্র নেন ৪৬ জন। বর্তমানে ১ হাজার ৬৪৪ জন কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে সর্বশেষ ১৫ সেপ্টেম্বর করোনার সংক্রমণ হার ওঠেছিল ৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ। এদিন ১১২ জন আক্রান্ত এবং ৮০০ জন সুস্থ হন। এরপর গত দশদিন আর ৫ শতাংশ অতিক্রম করেনি। এর মধ্যে সর্বনি¤œ সংক্রমণ হার ছিল ১৯ সেপ্টেম্বর, ১ দশমিক ৭৮ শতাংশ।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি আজ বাসস’কে বলেন, ‘এখন আমরা বলতে পারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে। আন্তর্জাতিক মাপকাঠিতেও বলা আছে, হার এক সপ্তাহের বেশি ৫ শতাংশের নিচে থাকলে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বলা যাবে। করোনা নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য বিভাগের পাশাপাশি প্রশাসন, মিডিয়া, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন সহায়তা প্রদানকারী বিত্তশালী ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে এজন্য ধন্যবাদ জানাতে হয়।’

চট্টগ্রামে টানা দশদিন করোনার সংক্রমণ ৫ শতাংশের নিচে

তবে ভাইরাসের নতুন কোনো মিউটেশন বা পরিবর্তিত কোনো পরিস্থিতিতে তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কার কথাও জানান সিভিল সার্জন। এ কারণে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি। ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ৬৪৪ নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে শহরের ৬ টি ও গ্রামের ৪ টির রেজাল্ট পজিটিভ আসে। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (চমেকহা) ল্যাবে ১৮১ নমুনায় গ্রামের ৩ টিসহ ১৪ টিতে ভাইরাস পাওয়া যায়। নগরীর বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের রিজিওনাল টিবি রেফারেল ল্যাবরেটরিতে (আরটিআরএল) ৩ টি নমুনা পরীক্ষা করা হলে একটিতেও করোনার জীবাণু শনাক্ত হয়নি।

বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরি শেভরনে ৪৮৮ করোনার সংক্রমণ নমুনা পরীক্ষা করা হলে গ্রামের একটি, আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ৫২ নমুনার মধ্যে শহরের একটি, মেডিকেল সেন্টারে ৯ এবং এপিক হেলথ কেয়ারে ২২ টি নমুনা পরীক্ষায় শহরের ২ টি করে নমুনায় করোনভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়। চট্টগ্রামের ১২৯ টি নমুনা কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় গ্রামের ২ টির পজিটিভ এবংঅবশিষ্টগুলোর নেগেটিভ রেজাল্ট আসে।

তবে এদিন চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি), ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল, ল্যাব এইড ও এন্টিজেন টেস্টে কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি।
রিপোর্ট বিশ্লেষণে ল্যাবভিত্তিক সংক্রমণ হার পাওয়া যায়, বিআইটিআইডি’তে ১ দশমিক ৫৫ শতাংশ, চমেকে ৭ দশমিক ৭৩, আরটিআরএলে ০ শতাংশ, শেভরনে ০ দশমিক ২০, আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে ১ দশমিক ৯২, মেডিকেল সেন্টারে ২২ দশমিক ২২, এপিক হেলথ কেয়ারে ৯ দশমিক ০৯ এবং কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১ দশমিক ৫৫ শতাংশ।

চট্টগ্রামে টানা দশদিন করোনার সংক্রমণ ৫ শতাংশের নিচে

 

করোনাভাইরাস