Table of Contents
ঘর-বাড়ি পরিষ্কার করতে গেলেই হাঁচি-কাশি শুরু হয়। পুরানো কাপড়-চোপড় ঝাড়াদিলেই হাঁচি-কাশি, চোখ লাল হয়ে যায়। এই সবই ডাস্ট অ্যালার্জির লক্ষণ, ১০০% বলতে পারি আপনার ডাস্ট (ধুলাবালি জনিত) অ্যালার্জি আছে ৷ ধুলোবালির কারণে ডাস্ট অ্যালার্জির সমস্যায় অনেকেই ভুগে থাকেন।
ডাস্ট অ্যালার্জির লক্ষণ :
- হাঁচি-কাশি
- চোখ-নাক থেকে অনবরত পানি পড়া
- ত্বকে চুলকানি, লালচে ভাব, ব়্যাশ এবং
- শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে।
ডাস্ট অ্যালার্জি ট্রিগার:
- ডাস্ট মাইটস (ধুলোর মধ্যে থাকা আণুবিক্ষনিক জীব)
- তেলাপোকা
- ধুলাবালি
- ফুলের পরাগ
- পোষা প্রাণীর পশম বা পালক
আপনার ডাস্ট অ্যালার্জি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে যখন:
- পরিবারের কারও যদি ধুলো জনিত বা অন্যান্য অ্যালার্জি থাকে
- প্রচুর ধুলো এবং ধূলিকণার সংস্পর্শে আসলে
- শিশু বা প্রাপ্তবয়স্ক হলে
ধুলাবালি জনিত অ্যালার্জি থেকে মুক্তি পেতে অনেকেই নানা ধরনের ওষুধ সেবন করেন। চাইলে ঘরে তৈরি খাবারদাবার ও আপনার জীবন ব্যবস্থার কিছু পরিবর্তন করে ডাস্ট অ্যালার্জি থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
ডাস্ট অ্যালার্জি থেকে মুক্তি পেতে বদলে ফেলুন আপনার জীবন ব্যবস্থা:
- শোবার ঘরের পর্দা ও কার্পেট পরিষ্কার রাখুন।
- পোষা প্রাণীকে শোবার ঘরের বাইরে রাখুন
- গদি এবং বালিশে “মাইট-প্রুফ” কেস ব্যবহার করুন
- বিছানার চাদর ঘন ঘন গরম জলে ধুয়ে নিন
- ঘড় বাড়ি পরিষ্কার করার সময় অবশ্যই মাস্ক পরুন
- আপনার বাড়িতে আপেক্ষিক আর্দ্রতা ৫০% এর কম রাখুন
- কাপোক বা পালকের বদলে পলিয়েস্টার ফাইবার ভরা বালিশ ব্যবহার করুন।
- আসবাবপত্রে ধুলোবালি বেশি জমে থাকে তাই সব সময় পরিষ্কার রাখুন।
অ্যালার্জিতে কার্যকারী ঘড়োয়া টোটকা:

- সবুজ শাক-সবজি খাওয়া: বেশি করে সবুজ শাক-সবজি খাওয়া। সবুজ শাক-সবজি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর সঙ্গে অ্যালার্জির প্রবণতা কমাতেও সাহায্য করে। সবুজ শাক-সবজি শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন, খনিজের (মিনারেল) যোগান দেয়।
- গ্রিন টি খাওয়া: ধুলাবালি জনিত অ্যালার্জির সমস্যায় গ্রিন টি খাওয়া যেতে পারে। গ্রিন টি-এর অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট উপাদান অ্যালার্জির সমস্যার সঙ্গে লড়তে সাহায্য করে। চোখে লাল ভাব, র্যাশ বেরনো ইত্যাদি রুখতে এটি অত্যন্ত কার্যকর।
- ঘি খাওয়া: ধুলাবালি জনিত অ্যালার্জির সমস্যায় ঘি খেয়ে দেখা যেতে পারে। ফল পাওয়া যাবে ম্যাজিকের মতো। ঘি প্রাকৃতিকভাবে যে কোনো ধরনের অ্যালার্জির সমস্যার সঙ্গে লড়াই করতে সক্ষম। ঘিতে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য বর্তমান, যা অনুনাসিক পথ পরিষ্কার করতে সাহায্য করে এবং ক্রমাগত হাঁচি থেকেও স্বস্তি দেয়। এক চামচ ঘি তুলোয় লাগিয়ে সরাসরি র্যাশে আক্রান্ত ত্বকে লাগান। ত্বকের জ্বালা ভাব, অস্বস্তি অনেকটাই কমে যাবে। প্রতিদিন ১ চামচ ঘি আপনার অ্যালার্জির সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে দেই।
- ইউক্যালিপটাস তেল: মাথা যন্ত্রণা, বন্ধ নাক, চোখ-নাক দিয়ে পানি পড়ালে। একটি পাত্রে গরম পানি নিয়ে তার মধ্যে কয়েক ফোঁটা ইউক্যালিপটাস তেল ফেলে তার ভাপ (ভেপার) নিন। এতে বন্ধ নাক খুলে যাবে, নাকের ভিতরে অ্যালার্জির কারণে হওয়া অস্বস্তিও কমে যাবে। তাতক্ষণিক আরাম পাবেন অ্যালার্জি জনিত কষ্ট থেকে।
- মধু খাওয়া: মধু স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে অত্যন্ত উপকারি, তা আমরা সকলেই জানি। তবে আমরা হয়তো অনেকেই জানি না, মধু ধুলাবালি জনিত অ্যালার্জির চিকিৎসার ক্ষেত্রেও অত্যন্ত সহায়ক।
মধু স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে অত্যন্ত উপকারি গবেষণা অনুযায়ী, মধু পরিবেশে উপস্থিত অ্যালার্জেনের সাথে শরীরকে খাপ খাওয়াতে সহায়তা করে। কেবলমাত্র এক চা চামচ মধুর সেবন, হাঁচি বা কাশির থেকে তাৎক্ষণিক স্বস্তি দিতে সক্ষম। মধুতে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য বর্তমান এবং আপনি অ্যালার্জির কারণে হওয়া ব়্যাশ কমাতেও এটি প্রয়োগ করতে পারেন।
- টকদই খাওয়া: প্রোবায়োটিক ধুলাবালি জনিত অ্যালার্জি প্রতিরোধের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিক অত্যন্ত উপকারি। এলার্জি মূলত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ভারসাম্যহীনতার কারণে হয়ে থাকে। অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং অ্যালার্জি থেকে মুক্তি পেতে, পর্যাপ্ত পরিমাণ উপকারি ব্যাকটেরিয়া গ্রহণ করুন। অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া বাড়াতে টকদই খেতে পারেন, কারণ এতে প্রোবায়োটিক রয়েছে।
- আপেল সাইডার ভিনেগার: ধুলাবালি জনিত অ্যালার্জির ক্ষেত্রে আপেল সাইডার ভিনেগার অত্যন্ত উপকারী। এক গ্লাস জলে, এক চা চামচ অ্যাপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে, দিনে দুই-তিনবার পান করুন। উপকার হাতেনাতে পাবেন।
অ্যালোভেরা জেল খুব ভালো ব্যথানাশক
- অ্যালোভেরা: অ্যালোভেরা জেল ডাস্ট অ্যালার্জির উপসর্গ হ্রাসের ক্ষেত্রে অ্যালোভেরা অত্যন্ত কার্যকর। ৩ থেকে ৪ টেবিল চামচ অ্যালোভেরার রস, দিনে দু’বার পান করুন। অ্যালোভেরাতে ব্যথানাশক এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য বর্তমান, যা ধুলাবালি জনিত অ্যালার্জির কারণে সৃষ্ট ব্যথা এবং ফোলা ভাবের চিকিৎসা ক্ষেত্রে অত্যন্ত উপকারি।
- স্টিম: ডাস্ট অ্যালার্জির চিকিৎসার ক্ষেত্রে অন্যতম উপায় হল স্টিম নেওয়া। একটি বড় পাত্রে গরম জল নিন এবং তার থেকে নির্গত বাষ্প নাক এবং মুখের সাহায্যে গ্রহণ করুন। এটা করার সময় মাথা টাওয়েল দিয়ে অবশ্যই ঢাকা রাখবেন। বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন ধরনের স্টিম নেওয়ার যন্ত্র কিনতে পাওয়া যায়। কমপক্ষে ১০ মিনিট স্টিম নিন। এটি ন্যাসাল প্যাসেজ পরিষ্কার করে।
এই সব ঘোড়য়া উপায় ও জীবন ব্যবস্থা পরিবর্তনের মাধ্যমে আপনি ধুলাবালি জনিত অ্যালার্জি থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
অ্যালার্জি সর্ম্পকে আরও বিস্তারিত জানতে:
- উইকিপিডিয়া : অতিপ্রতিক্রিয়া (অ্যালার্জি)
বাংলাদেশের খবর সাইটটি ব্যবহার করায় আপনাকে ধন্যবাদ। আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে “যোগাযোগ” আর্টিকেলটি দেখুন, যোগাযোগের বিস্তারিত দেয়া আছে।
Comments are closed.