হাদিসুরকে রাষ্ট্রীয় বীর ও তদন্ত কমিটি দাবি বিএমএমওএ’র

ইউক্রেনের যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ওই অঞ্চলে ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজ গমনের অনুমতি দেওয়ায় মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুরের মৃত্যুর মতো করুণ পরিস্থিতি দেখতে হয়েছে বলে মনে করছেন বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএমওএ) নেতৃবৃন্দ।

হাদিসুরকে রাষ্ট্রীয় বীর ও তদন্ত কমিটি দাবি বিএমএমওএ’র

নিহত থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ হাদিসুর রহমানকে রাষ্ট্রীয় বীর ঘোষণা এবং এজন্য বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের গাফলতি খতিয়ে দেখতে বিএমএমওএ’র দুইজন প্রতিনিধিসহ তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

আজ সকালে নগরীর বারিক বিল্ডিং এলাকায় বিএমএমওএ’র কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। এসময় জীবিত ২৮ নাবিককে সাহসিকতা ও বীরত্বের জন্য রাষ্ট্রীয় সম্মাননা এবং পুরস্কার দেওয়ারও দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।

হাদিসুরকে রাষ্ট্রীয় বীর ও তদন্ত কমিটি দাবি বিএমএমওএ’র
বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের মালিকানাধীন বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজের সার্বিক পরিস্থিতি এবং নাবিকদের অবিলম্বে ফেরত আনার দাবিতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিএমএমওএ’র সাধারণ সম্পাদক মেরিন ইঞ্জিনিয়ার মো. শাখাওয়াত হোসেন।

সংবাদ সম্মেলনে বিএমএমওএ’র সাধারণ সম্পাদক মেরিন ইঞ্জিনিয়ার মো. শাখাওয়াত হোসেন বলেন, জাহাজ পরিচালনায় বিএসসির গাফিলতি হয়েছে। এটি তদন্তে কমিটি গঠন করতে হবে।

কমিটিতে আমাদের দুজন প্রতিনিধিকেও রাখতে হবে। নাবিকদের দ্রুত সময়ের মধ্যে নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। সে সঙ্গে নিহত থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ হাদিসুর রহমানকে রাষ্ট্রীয় বীর ঘোষণা দেয়ার দাবিও জানান বিএমএমওএ’র নেতৃবৃন্দ।

হাদিসুরকে রাষ্ট্রীয় বীর ও তদন্ত কমিটি দাবি বিএমএমওএ’র

সংবাদ সম্মেলনে বিএমএমওএ’র ভাইস প্রেসিডেন্ট মেরিন ইঞ্জিনিয়ার মো. মাহবুবুর রহমান, সহ সাধারণ সম্পাদক মেরিন ইঞ্জিনিয়ার মো. গোলাম জিলানি ও মো. ইফতেখার আলম উপস্থিত ছিলেন।

লিখিত বক্তব্যে বিএমএমও নেতৃবৃন্দ জানান, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি জয়েন্ট ওয়ার কমিটি জায়গাটি যুদ্ধকবলিত অঞ্চল ঘোষণা করেছে। জাহাজটি নোঙর করেছে ২২ ফেব্রুয়ারি, যা সম্পূর্ণ প্রশ্নবিদ্ধ। জেনে বুঝে বিএসসি কেন যুদ্ধকবলিত ওই অঞ্চলে বাংলার সমৃদ্ধিকে প্রবেশ করতে অনুমতি দিলো?

তাছাড়া চার্টার পার্টি বিধিমালা অনুযায়ী কোনও জাহাজ কোম্পানি তার জাহাজের নিরাপত্তার জন্য যুদ্ধকবলিত এবং জলদস্যুপ্রবণ এলাকাতে জাহাজ গমনের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে। এক্ষেত্রে জাহাজ মালিক বিএসসির পক্ষ থেকে জাহাজটিকে যুদ্ধকবলিত এলাকায় কেন গমনের অনুমতি দিল? তারাতো চাইলে জাহাজটি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরের জলসীমায় প্রবেশের আগেই ঠেকাতে পারতো।

হাদিসুরকে রাষ্ট্রীয় বীর ও তদন্ত কমিটি দাবি বিএমএমওএ’র

উল্লেখ্য, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের এমভি বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজটি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে নোঙর করে। পরদিনই রাশিয়ার হামলা শুরু হয় ইউক্রেনে।

তখন থেকেই জাহাজটি গত আট দিন ধরে আটকে আছে সেখানে। গত বুধবার হামলার পর অলভিয়া বন্দরে থাকা বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজে আগুন ধরে যায়। শুরুতে নাবিকরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন।

অলভিয়া বন্দর থেকে একটি টাগবোট এসে আগুন নেভানোর কাজে অংশ নেয়। নাবিকদের চেষ্টায় জাহাজের আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। হামলায় জাহাজের ব্রিজ ধ্বংস হয়ে গেছে। ধ্বংসস্তূপে নিথর দেহ পড়ে ছিলেন হাদিসুর রহমান আরিফ।