নড়াইলে পালিত হচ্ছে শুভ্রা মুখার্জীর ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী

আজ সকাল ৮টায় পূজা অর্চনার মধ্য দিয়ে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়েছে।সকাল সাড়ে ১০টায় নামসংকীর্তন, গীতাপাঠ, গীতাদান,অন্নদান,বস্ত্রদান অনুষ্ঠিত হয়।বিকেল ৪টায় অনুষ্ঠিত হবে তাঁর জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা সভা। শুভ্রা মুখার্জী ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোসের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান।বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায়।

নড়াইলে পালিত হচ্ছে শুভ্রা মুখার্জীর ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী
প্রণব মুখার্জী ও তাঁর স্ত্রী শুভ্রা-মুখার্জী

 

নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে বুধবার পালিত হচ্ছে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জীর সহধর্মিনী নড়াইলের মেয়ে শুভ্রা মুখার্জী ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী। ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী পালন উপলক্ষে সদর উপজেলার তুলারামপুরে মামাবাড়িতে তাঁর (শুভ্রার) স্ব-ইচ্ছায় নির্মিত শ্রীশ্রী গোপাল মন্দির ও কালি মন্দির প্রাঙ্গনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দিনব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে শুভ্রা মুখার্জী ফাউন্ডেশন।

নড়াইল শহর থেকে ৮ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে সদর উপজেলার ভদ্রবিলা গ্রামে ১৯৪৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন ভারতের প্রয়াত সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জীর স্ত্রী শুভ্রা-মুখার্জী। শুভ্রার বাবার নাম অমরেন্দ্র ঘোষ ও মা মীরা রানী ঘোষ। জন্মের পরে তাঁর নাম রাখা হয় গীতা। গীতার শৈশব ও কৈশোর কেটেছে নড়াইলের ভদ্রবিলা এবং মামাবাড়ি তুলারামপুর গ্রামে।এ দু’টি গ্রামে শুভ্রা-মুখার্জীর অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। গ্রাম দু’টিতে রয়েছে অনেক আত্মীয়-স্বজনও। প্রণব মুখার্জীর সঙ্গে ১৪ বছর বয়সে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন শুভ্রা।

নড়াইলে পালিত হচ্ছে শুভ্রা মুখার্জীর ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী
প্রণব মুখার্জী ও তাঁর স্ত্রী শুভ্রা-মুখার্জী

 

তখন প্রণব মুখার্জীর বয়স ২২ বছর। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রিধারী শুভ্রা পেশায় ছিলেন অধ্যাপক। ভালো রবীন্দ্রসংগীতও গাইতে পারতেন। লিখেছেন অসংখ্য গল্প, প্রবন্ধ ও ফিচার। প্রণব মুখার্জীর সঙ্গে বিয়ের পর নড়াইলের মেয়ে গীতা ঘোষ পরিচিতি পান ‘শুভ্রা-মুখার্জী’ হিসেবে। শুভ্রা-মুখার্জী গত ২০১৫ সালের ১৮ আগস্ট সকাল ১০টা ৫১ মিনিটে ভারতের নয়াদিল্লির একটি সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

শুভ্রা-মুখার্জীর মামাতো ভাই নড়াইলের তুলারামপুর গ্রামের কার্তিক ঘোষ জানান,শুভ্রা-মুখার্জীর শৈশবের প্রথম দিকটা ভদ্রবিলা গ্রামে নিজবাড়িতে (পিত্রালয়) কাটলেও পরে তুলারামপুরে মামাবাড়ি থেকে চাঁচড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় মতান্তরে তৃতীয় শ্রেণী শ্রেণি পর্যন্তু লেখাপড়া করেন। এরপর চলে যান কলকাতায়। নয় ভাইবোনের মধ্যে শুভ্রা ছিলেন দ্বিতীয়। অন্যরা ভারতে চলে গেলেও নড়াইলের ভদ্রবিলা গ্রামে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন শুভ্রা মুখার্জীর ছোট ভাই কানাই লাল ঘোষ। এদিকে, শুভ্রা-মুখার্জীর ইচ্ছায় তার মামাবাড়ি তুলারামপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়সহ দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দুটি ভবন, তিনটি মন্দির এবং নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজে একটি পাঁচতলা ছাত্রী হোস্টেল নির্মিত হয়েছে।

নড়াইলে পালিত হচ্ছে শুভ্রা মুখার্জীর ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী
প্রণব মুখার্জী ও তাঁর স্ত্রী শুভ্রা-মুখার্জী

 

সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৫ সালে মেয়ে শর্মিষ্ঠা মুখার্জী মুন্নিকে নিয়ে শুভ্রা মুখার্জী পৈত্রিক ভিটা নড়াইলের ভদ্রবিলার বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন। সে সময় সঙ্গে ছিলেন না প্রণব মুখার্র্জী। ২০১৩ সালের ৫ মার্চ ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জীর সঙ্গে নড়াইলের ভদ্রবিলার পৈত্রিক বাড়িতে বেড়াতে আসেন শুভ্রা মুখার্জী। শুভ্রা ও প্রণব মুখার্জী দম্পতির দু’ছেলে অভিজিৎ মুখার্জী ও সুরজিৎ মুখার্জী এবং মেয়ে শর্মিষ্ঠা মুখার্জী। তারা প্রত্যেকেই নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত।

Comments are closed.