জেলায় মৎস্য চাষী দের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী স্বয়ংসম্পূর্ণ বলে জানিয়েছেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, গত অর্থবছরে জেলায় মোট মাছের চাহিদা ছিল ৩১ হাজার ৭৪৪ টন। একই অর্থবছরে মোট মাছ উৎপাদন হয়েছে ৩৩ হাজার ৬৭১ দশমিক ৩১ টন। জেলায় মৎস্য চাষী উৎপাদন হয়েছে ১ হাজার ৯২৬ দশমিক ২৬ টন।তিনি বলেন, আমরা মাছ চাষে সফল। জেলায় মাছের চাহিদা মিটিয়ে আমাদের উদ্ধৃত্ত রয়েছে।
আমিনুল ইসলাম বলেন, আমরা বিভিন্নভাবে মৎস্য চাষী দের উৎসাহিত করার চেষ্টা করছি। মাছ চাষী ও খামারিদের জন্য মৎস্যচাষ উপকরণ এবং প্রকল্প তৈরীতে সহযোগিতা করা হয়। মৎস্য খাতে ক্ষুদ্র ঋণ দেয়ার চেষ্টার পাশাপাশি মৎস্যজীবীদের মাঝে মৎস্য অধিদপ্তরের আওতায় ভিজিএফ এর খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়৷ এছাড়াও সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ইলিশ ধরা নিষেধকালে নিবন্ধিত সমুদ্রগামী জেলেদের সহযোগিতা করা হয়ে থাকে। যাতে তারা ওই সময়টাতে পরিবার নিয়ে চলতে পারে।

তিনি বলেন, আমরা সফলভাবে মাছ চাষ করলেও আমাদের জনবল সংকট রয়েছে। যে কাজ আমরা একজন কর্মকর্তা দিয়ে করানোর কথা তাকে দিয়ে অনেকগুলো কাজ করাতে হচ্ছে। এতে করে বাইরের অনেক কাজ করা সম্ভব হয় না। জেলার মোট ৩০ হাজার হেক্টর জলভাগে ৩৩ হাজার ৬৭১ দশমিক ৩১ টন মাছ উৎপাদন হয় বলে জানিয়েছেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম। তিনি জানান, যার মধ্যে রয়েছে সরকারি বেসরকারি পুকুর এবং দিঘি। খাঁচায় মাছ চাষ, চিংড়ি খামার/ঘের, সাগর, নদ-নদী, প্লাবন ভূমি, বিল, পেনে মাছ চাষ। এছাড়াও মৌসুমী মাছচাষে ধানক্ষেতে ও বারোপিটে মাছ চাষ হয়।
জেলায় মৎস্যজীবী এবং মৎস্যচাষীর সংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার বলে জানান তিনি। জেলায় মোট মৎস্যচাষী রয়েছে ২৪ হাজার ৯৬০ জন। যার মধ্যে পুরুষ ২৩ হাজার ৬০০ জন এবং মহিলা ১হাজার ৩৬০ জন মৎস্যজীবী রয়েছে ৬ হাজার ২০৮ জন যার মধ্যে ৪ হাজার ৮৭৮ জন নিবন্ধিত। এদের মধ্যে সমুদ্রগামী জেলে রয়েছে ৩৪৫ জন। তিনি বলেন, জেলায় বিল নার্সারী রয়েছে ৪টি, মাছ বাজার রয়েছে ১৫৭ টি, বরফকল রয়েছে ৬ টি যার মধ্যে ৪ টি নিবন্ধিত। সরকারি মৎস্য খামার রয়েছে ২ টি, হ্যাচারী রয়েছে ২টি। এইছাড়াও মৎস্য অভয়াশ্রম ৩ টি, নিবন্ধিত মৎস্য খাদ্য বিক্রয় প্রতিষ্ঠান ৫৭ টি, মৎস্য খাদ্য উৎপাদন কারখানা ১টি, মৎস্য খাদ্য আমদানী কারক প্রতিষ্ঠান ১টি, বেসরকারি মৎস্য হ্যাচারী রয়েছে ১৪টি।

জেলায় মাছচাষে একাধিক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে বলে জানান জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম। অধিকাংশ জলাশয়ে নভেম্বর-মার্চ পর্যন্ত পানি থাকে। পাহাড়ী ঢলে পরশুরাম, ছাগলনাইয়া ও ফুলগাজীর কিছু এলাকার পুকুর প্রতি বছর প্লাবিত হয়। দেশীয় প্রজাতির পোনামাছ (শিং, মাগুর, গুলশা, পাবদা ইত্যাদি) প্রাপ্তিতে সমস্যা দেখা দেয়। তিনি বলেন, মৎস্য বিভাগের অনেক প্রকল্পের এই জেলার উপজেলাগুলোতে কার্যক্রম নেই এবং সরকারি হ্যাচারিগুলোতে অবকাঠামোগত সমস্যা রয়েছে। এছাড়াও সরকারি দপ্তরগুলোতে জনবলের সমস্যা উল্লেখ করেন তিনি।
