মুজিবনগরের নাগার খাল পুনঃখননে ৫ হাজার ৭০০ টন ধান অতিরিক্ত উৎপন্ন হবে

জেলার মুজিবনগরের নাগার খাল পুন:খননে পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি এলাকার কৃষকরা এখন থেকে পাবে সেচ সুবিধা। জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মানুষের জীবন-জীবিকার জন্য পানির চাহিদা পূরণ এবং টেকসই উন্নয়ন এবং খালে পানি ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে মৎস্য চাষের উন্নয়ন করার স্বপ্ন দেখছে খাল পাড়ের মানুষ। এখন শত-শত হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা পাবে কৃষকেরা। পুনঃখননকৃত খালের উভয় পাড়ের নতুন মাটিতে বিভিন্ন প্রকারের গাছের চারা রোপণ করে পরিবেশের ভারসম্য রক্ষার দাবি জানিয়েছেন খালপাড়ের কৃষক ও খাল নিকটবর্তী গ্রামের মানুষ।

মুজিবনগরের নাগার খাল পুনঃখননে ৫ হাজার ৭০০ টন ধান অতিরিক্ত উৎপন্ন হবে

মেহেরপুরের মুজিবনগরের নাগার খাল মাঠের প্রায় ১৩শ’ হেক্টর জমিতে জলাবদ্ধতার কারণে বছরে মাত্র একবার ফসল উৎপাদন হতো। সেই মাঠে এখন বারো মাসই উৎপাদন হবে ফসল। সেই সাথে লাভবান হবে এলাকার প্রায় ২০ হাজার কৃষক।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ও মেহেরপুর ১ আসনের সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় নাগার মাঠের পানি নিষ্কাশনের জন্য বড়নাগা হতে ভৈরব নদ পর্যন্ত ৪২ লাখ টাকা ব্যায়ে ৪ কিলোমিটার খালের পুন:খননের কাজ সমাপ্ত হয়েছে। ফলে চলতি বর্ষা মৌসুমেও এই মাঠের ১ হাজার ২৮৫ হেক্টর জমিতে ৫ হাজার ৭০০ টন অতিরিক্ত ধান উৎপন্ন হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।কৃষি বিভাগ থেকে জানা গেছে, মেহেরপুর সদর উপজেলার রাধাকান্তপুর, মুজিবনগর উপজেলার বিদ্যাধরপুর, দারিয়াপুর, পুরন্দরপুর, গৌরিনগর, গোপালনগর ও নাজিরাকোনা গ্রামের প্রায় ২০ হাজার কৃষক এই মাঠে চাষাবাদ করে।

মুজিবনগরের নাগার খাল পুনঃখননে ৫ হাজার ৭০০ টন ধান অতিরিক্ত উৎপন্ন হবে

 

বড় নাগার মাঠ থেকে গৌরিনগর গ্রামের ভিতর দিয়ে ভৈরব নদীতে পানি নিস্কাশনের জন্য একটি খাল থাকলেও কালের পরিক্রমায় সেটি ভরাট ও দখল হয়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে যায় মাঠের পানি নিস্কাশন। প্রায় ১৩শ’ হেক্টর জমিতে শুস্কমৌসুমে বছরে একবার ফসল উৎপাদন করা যেত এই মাঠে। বছরের বেশিরভাগ সময় এ এলাকার জমি থাকতো পানির নিচে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নাগার বিল থেকে গৌরিনগর গ্রামের ভিতর দিয়ে প্রায় ৪ কিলোমিটার পানি নিষ্কাশনের সু-ব্যবস্থা করার জন্য খালটি পুনঃখনন করে। ফলে বর্ষা মৌসুমের অতিরিক্ত পানি নাগার খাল দিয়ে ভৈরব নদে প্রবেশ করতে পারবে।

নাগা মাঠের চাষী উপজেলার গৌরিনগর গ্রামের ইমদাদুল হক বলেন, নাগার মাঠে আমার ৭ বিঘা জমি আছে। আমি দীর্ঘদিন ধরে চাষ আবাদ করে আসছি। বোরো মৌসুমে এ মাঠে ধান ভালো হলেও আমন মৌসুমে ধানের জমি পানির নিচে তলিয়ে যায়। তবে খালটি পুন:খনন করায় এবার নিশ্চিন্তে আবাদ করতে পারবো।নাগারমাঠের চাষি উপজেলার গোপাল নগর গ্রামের আব্দুর রশিদ যিনি নিজের ৫ বিঘা সহ আরও ৪ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে চাষ করেন। তিনি বলেন, এক ফসলি জমি হওয়ায় এমাঠের জমির দামও কম। নাগার খাল পুন:খনন হওয়ায় এ মাঠের জমি দাম যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে, তেমনি নিশ্চিন্তে বরোমাসই ফসল ফলাতে পারবো।

মুজিবনগরের নাগার খাল পুনঃখননে ৫ হাজার ৭০০ টন ধান অতিরিক্ত উৎপন্ন হবে

মুজিবনগর উপজেলা কৃষি অফিসার আনিছুজ্জামান খান বলেন, উপজেলার নাজিরাকোনা গ্রাম হতে বিদ্যাধরপুর পর্যন্ত ১২শ’ ৮৫ হেক্টর আবাদি জমি আছে। নাগামাঠে এই জমি প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে পানির তলে ডুবে যাওয়ার কারনে ফসল খুব বেশি হয় না। নাগার মাঠের পানি নিষ্কাশনের খাল পুনঃখননের ফলে এখন প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে আরও অতিরিক্ত ৫ হাজার ৭০০ টন ধান উৎপন্ন হবে বলে আশা করছি।

আরও দেখুনঃ

উচ্চ কোলেস্টেরল আপনার পায়ে বিপজ্জনকভাবে প্রভাব ফেলে

মুজিবনগর 

Comments are closed.