‘রেসিলেন্স অ্যান্ড রি-মোবিলাইজেশন টুয়ার্ডস ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ’ শীর্ষক দশ দিনব্যাপি এক কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বাংলাদেশে বিশ্ব ঐতিহ্যগুলোকে ইউনেস্কোর দিক নির্দেশনা মেনে সঠিকভাবে সংরক্ষণ এবং আগামী প্রজন্মের কাছে এর গুরুত্ব তুলে ধরার তাগিদ দিয়েছেন।
ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ ভলান্টিয়ার্স ক্যাম্পেইন ২০২২এর আওতায় ‘মাইন্ডফুলনেস প্র্যাকটিস ইন হেরিটেজ কনজারভেশন এ্যাট দি রুইনস অব বুদ্ধিষ্ট বিহার এ্যাট পাহাড়পুর, বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্যর দশ দিনব্যাপি সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রতন চন্দ্র পন্ডিত সভাপতিত্ব করেন।
সম্প্রতি রাজধানীর আগাঁরগাওস্থ প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তর মিলনায়তনে এই অনুষ্টান অনুষ্ঠিত হয়।
Table of Contents
সভাপতির বক্তব্যে রতন চন্দ্র পন্ডিত বলেন, পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারসহ বাংলাদেশে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থাপনার সঠিক সংরক্ষণ অত্যন্ত জরুরি।তিনি এ সব স্থাপনার আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক মূল্যের প্রতি সচেতনতা তৈরিতে স্কুল পর্যায় থেকে এ বিষয়ে সচেতনতামূলক শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করার আহ্বান জানান। অনুষ্ঠান শেষে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সনদপত্র প্রদান করা হয়।
রতন চন্দ্র পন্ডিতের সভাপতিত্বে সমাপনী অধিবেশনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রধান স্থপতি ড. এ এস এম আমিনুর রহমান, বিশিষ্ট চলচিত্রকার ও স্থপতি মসিউদ্দিন শাকের, বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের সহ-সভাপতি ভান্তে স্বরুপানন্দ ভিক্ষু।
স্থপতি ড. এ এস এম আমিনুর রহমান বলেন, দেশের অমূল্য এ সব ঐতিহ্য প্রতœতাত্ত্বিক সম্পদের সঠিক সংরক্ষণ এবং এর অপার সম্ভবনাকে কাজে লাগানোর জন্য অংশীজনের সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের জোরালো উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান।
বিশিষ্ট চলচিত্রকার ও স্থপতি মসিউদ্দিন শাকের বলেন, প্রতিটি ঐতিহ্যের পেছনে রয়েছে ইতিহাস, সংস্কৃতি আর বহু মানুষের মেধা, পরিশ্রম ও ত্যাগ। তাই এ সব সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণ করার সময় মূল জিনিসটি যাতে কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার পরিদর্শন শেষে প্রতœতত্ত্ব নিয়ে কাজ করেন এমন একদল গবেষক, ছাত্র, বিশেষজ্ঞরা তাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন। তারা দেশের প্রতœতত্ত্ব স্থাপনাগুলোর বর্তমান অবস্থা তুলে ধরেন এবং এ সব সংরক্ষণে সঠিক গবেষণা ও যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
স্থাপত্য নকশা প্রণয়ন-পরামর্শ প্রদান ও প্রতœতত্ব গবেষণা সংস্থা নগর উপাখ্যান-পারসিভ ও ওয়ান কালচার ফাউন্ডেশেন ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ ভলান্টিয়ার্স (ডব্লিউএইচভি) ক্যাম্পেইন-২০২২ এর আওতায় ‘মাইন্ডফুলনেস প্র্যাকটিস ইন হেরিটেজ কনজারভেশন এ্যাট দি রুইনস অব বুদ্ধিষ্ট বিহার এ্যাট পাহাড়পুর, বাংলাদেশ’ শীর্ষক এ কর্মশালার আয়োজন করে।
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রতœতত্ব বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন আর্টস বিভাগ, ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অন মনুমেন্ট অ্যান্ড সাইটস ( আইসিওএমওএস) এবং প্রাইম ব্যাংক এর সহযোগিতায় এটি আয়োজন করা হয়।
বিশ্ব ঐতিহ্য নিয়ে সচেতনতা তৈরি করতে ইউনেস্কো প্রতিবছর বিশ্ব জুড়ে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ ভলান্টিয়ার প্রোগ্রাম আয়োজন করে।
ইউনেস্কোর এই ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ ভলেন্টিয়ারস (ডব্লিউএইচভি) ক্যাম্পেইনিং-২০২২এর মূল প্রতিপাদ্য ‘রেসিলেন্স অ্যান্ড রি-মোবিলাইজেশন টুয়ার্ডস ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ’। এ বছর সারা বিশ্বের ২৯টি দেশের ৪৪টি সংস্থা একযোগে এই ক্যাম্পেইনটি পরিচালনা করছে। বাংলাদেশ থেকে পারসিভ এ বছর এই ক্যাম্পেইন আয়োজনের জন্য নির্বাচিত হয়।
দেশ-বিদেশের স্থাপত্য, প্রতœতত্ব ও বিশ্ব ঐতিহ্য নিয়ে কাজ করেন এমন শিক্ষক, গবেষক, লেখক, পন্ডিত এবং এ বিষযের ছাত্ররা কর্মশালায় অংশ নেন । কর্মশালায় জাতীয় জাদুঘর পরিদর্শন, টেরাকোটা নিয়ে কর্মশালাসহ পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার পরিদর্শন অন্তর্ভূক্ত ছিল।
পারসিভ-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক ফাতিহা পলিন এবং ওয়ান কালচার ফাউন্ডেশনের শাহিদুল ইসলাম অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন। নগর উপাখ্যান-পারসিভ’র পরিচালক, ফারজানা সুলতানা অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
আরও দেখুনঃ
Comments are closed.