বঙ্গমাতা কবিতা – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

বঙ্গমাতা কবিতা – বঙ্গমাতা হলো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত একটি বিখ্যাত বাংলা কবিতা।এটি তার চৈতালি (১৮৯৬) কাব্যগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত।কবিতায় মোট ১৪টি লাইন আছে।

 

বঙ্গমাতা কবিতা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
বঙ্গমাতা কবিতা – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

 

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর  (৭ মে ১৮৬১ – ৭ আগস্ট ১৯৪১; ২৫ বৈশাখ ১২৬৮ – ২২ শ্রাবণ ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ) ছিলেন অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক। তাকে বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক মনে করা হয়। রবীন্দ্রনাথকে “গুরুদেব”, “কবিগুরু” ও “বিশ্বকবি” অভিধায় ভূষিত করা হয়। রবীন্দ্রনাথের ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক,  ১৩টি উপন্যাস ও ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্যসংকলনতার জীবদ্দশায় বা মৃত্যুর অব্যবহিত পরে প্রকাশিত হয়। তার সর্বমোট ৯৫টি ছোটগল্প ও ১৯১৫টি গান যথাক্রমে গল্পগুচ্ছ ও গীতবিতান সংকলনের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় প্রকাশিত ও গ্রন্থাকারে অপ্রকাশিত রচনা ৩২ খণ্ডে রবীন্দ্র রচনাবলী নামে প্রকাশিত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় পত্রসাহিত্য উনিশ খণ্ডে চিঠিপত্র ও চারটি পৃথক গ্রন্থে প্রকাশিত। এছাড়া তিনি প্রায় দুই হাজার ছবি এঁকেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের রচনা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য তিনি এশীয়দের মধ্যে সাহিত্যে প্রথম নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

 

বঙ্গমাতা কবিতা – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

পুণ্যে পাপে দুঃখে সুখে পতনে উত্থানে
মানুষ হইতে দাও তোমার সন্তানে
হে স্নেহার্ত বঙ্গভূমি, তব গৃহক্রোড়ে
চিরশিশু করে আর রাখিয়ো না ধরে।
দেশদেশান্তর-মাঝে যার যেথা স্থান
খুঁজিয়া লইতে দাও করিয়া সন্ধান।
পদে পদে ছোটো ছোটো নিষেধের ডোরে
বেঁধে বেঁধে রাখিয়ো না ভালোছেলে করে।
প্রাণ দিয়ে, দুঃখ স’য়ে, আপনার হাতে
সংগ্রাম করিতে দাও ভালোমন্দ-সাথে।
শীর্ণ শান্ত সাধু তব পুত্রদের ধরে
দাও সবে গৃহছাড়া লক্ষ্মীছাড়া ক’রে।
সাত কোটি সন্তানেরে, হে মুগ্ধ জননী,
রেখেছ বাঙালী করে, মানুষ কর নি।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 3 বঙ্গমাতা কবিতা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

 

বঙ্গমাতা কবিতা প্রেক্ষাপট :

‘চৈতালী’ কাব্যগ্রন্থের ‘বঙ্গমাতা’ কবিতাটি যেসময় রবীন্দ্রনাথ লিখছেন সেই সময়কে ভারতে ঔপনিবেশিকতাবাদ বিরোধী আন্দোলনের প্রাকসূচনা পর্ব বলা যেতে পারে। এই সময়কালেই, কয়েক বছর আগে-পরে, ভারতীয় জাতীয়তাবাদের উন্মেষ ঘটছে, রাজা রবি বর্মা ‘ভারত মাতা’ ছবিটি আঁকছেন, লেখা হচ্ছে ‘দুর্গেশনন্দিনী’, ‘আনন্দমঠ’। বৃটিশ শাসনের বিরুদ্ধে পরাধীন ভারতবাসী ঐক্যবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করছেন ‘জাতীয়তাবাদ’-এর সূত্রে। কয়েক বছরের মধ্যেই বাংলা উত্তাল হবে বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে। রবীন্দ্রনাথ প্রাথমিক দ্বিধা কাটিয়ে ক্রমে সক্রিয় হয়ে উঠবেন সেই আন্দোলনে।

‘বঙ্গমাতা’ কবিতাটি তার কিছুকাল পূর্বে (১৩০৩ বঙ্গাব্দে) লেখা। এই কবিতায় চূড়ান্ত সামাজিক-রাজনৈতিক আন্দোলনের সূচনা পূর্বে নিস্ক্রিয়তার ও আত্মকেন্দ্রিকতার বিরুদ্ধে কবির সামালোচনা ও আহ্বান চোখে পড়ে।

আজ বর্তমান পশ্চিমবঙ্গও এক সামাজিক-রাজনৈতিক পালাবদলের মুখে। এই সময়ে, সমকালের কবি অমিতাভ প্রহরাজ রবীন্দ্রনাথের সে’দিনের বয়সের কাছাকাছি। আমরা দেখতে চাই, অমিতাভ তাঁর সহনাগরিকদের কাছে কোন বার্তা, আহ্বান প্রেরণ করেন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বঙ্গমাতা কবিতা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

 

বঙ্গমাতা কবিতা আবৃত্তিঃ

 

আরও দেখুনঃ