মুক্তিযুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধে ফেনীতে পুলিশের ভূমিকাও ছিল বীরত্বপূর্ণ

মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধে ফেনীতে তৎকালীণ পুলিশের ভূমিকাও ছিল বীরত্বপূর্ণ। ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ ফেনীতে মুক্তিকামী জনতা পাকিস্তানি হানাদারদের সশস্ত্র প্রতিরোধ করে। আগেরদিন তৎকালীন সিও অফিস (সদর উপজেলা পরিষদ) নিয়ন্ত্রণ নেয় পাকিস্তানি আর্মির একটি দল।

মুক্তিযুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধে ফেনীতে পুলিশের ভূমিকাও ছিল বীরত্বপূর্ণ

মুক্তিযুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধে ফেনীতে পুলিশের ভূমিকা: পুলিশ, অবসরপ্রাপ্ত ইপিআর সদস্য, ছাত্র-জনতা সেদিন সজ্জিত পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। এ যুদ্ধে জয়ী হয় বাঙালি। যুদ্ধে ৫ জন, মতান্তরে ১১ জন পাক সেনা বীর বাঙালির হাতে নিহত হয়।

মুক্তি-যুদ্ধে পুলিশ, নোয়াখালী জেলা শীর্ষক বইয়ের তথ্যমতে এদিন পু-লিশ কনস্টেবল মো. মনিরুল হক শহীদ হন।

download 63 1 মুক্তিযুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধে ফেনীতে পুলিশের ভূমিকাও ছিল বীরত্বপূর্ণ

 

২৭ মার্চ সিও অফিস যুদ্ধ প্রসঙ্গে বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক জয়নাল আবদীন জানান, ফেনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলীসহ ১২/১৩ জনের একটি দল এ যুদ্ধে অংশ নেন। একইদিন সকালে থানা হতে খাজা আহমদের নেতৃত্বাধীন ছাত্র-জনতাকে মালখানা হতে সকল রাইফেল, কার্তুজ সরবরাহ করে ওসিসহ অন্যরা। এ রসদ ছিল আমাদের বড় শক্তি।

উক্ত গ্রন্থে নোয়াখালীতে মুক্তি-যুদ্ধের প্রস্তুতি ও প্রতিরোধ অধ্যায়ে উল্লেখ করা হয়, ৭১-এর ২৬ মার্চ নোয়াখালী সার্কিট হাউজে মুক্তিকামী সকল মানুষের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে ২৫ মার্চ গণহত্যা ও বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনা তুলে ধরা হয়। এতে তৎকালীন নোয়াখালী জেলা পু-লিশ সুপার বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আব্দুল হাকিম পু-লিশ বাহিনীর ভূমিকা রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মোতালেব জানান, ২৬ মার্চ পাক হানাদার বাহিনী ফেনী হয়ে চট্টগ্রাম যাবার পথে সিও অফিস তাদের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। সিও অফিস হানাদার মুক্ত করতে একরাত দুইদিন থেমে থেমে যুদ্ধ চলে।

মুক্তিযুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধে ফেনীতে পুলিশের ভূমিকাও ছিল বীরত্বপূর্ণ

ফেনী থানার তৎকালীন ওসি মোহাম্মদ আলীর সাহসিকতার প্রশংসা করে অধ্যাপক জয়নাল আবদীন বলেন, সেদিন পু-লিশের ভূমিকা ছিল বীরত্বপূর্ণ। এপ্রিলের শেষের দিকে ফেনী আবার পরাধীন হলে বিলোনীয়ায় আবার দেখা হয় মোহাম্মদ আলীর সাথে। মুক্তি-যুদ্ধে একজন বীর হিসেবে তিনি মাঠে ছিলেন। তিনি ছাড়াও একাধিক পু-লিশ সদস্যকে ভারত ও যুদ্ধক্ষেত্রে বীরের বেশে দেখেছি।

২৭ মার্চ সিও অফিস যুদ্ধে শহীদ হন নোয়াখালী পু-লিশ লাইন্সের কনস্টেবল মো. মনিরুল হক। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী এ যুদ্ধে তিনি একমাত্র এবং প্রথম শহীদ।

মুক্তি-যুদ্ধে পু-লিশ, নোয়াখালী জেলা গ্রন্থটির একজন গবেষক একেএম গিয়াস উদ্দিন মাহমুদ এ প্রসঙ্গে বলেন, ২৬ মার্চ সিও অফিস দখলের খবর জেনে নোয়াখালী পু-লিশ সুপার শহীদ আব্দুল হাকিমের নির্দেশে পু-লিশ সদস্যরা ফেনীতে যুদ্ধে যোগ দেয়। শহীদ মনিরুল হক নোয়াখালী হতে আসা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের একজন।

মুক্তিযুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধে ফেনীতে পুলিশের ভূমিকাও ছিল বীরত্বপূর্ণ

তিনি জানান, শহীদের স্মৃতি ধরে রাখতে নোয়াখালী পু-লিশ লাইন্সের একটি ভবন শহীদ কনস্টেবল মনিরুল হকের নামে নামকরণ করা হয়েছে।

আরও দেখুনঃ

সাঁওতাল বিদ্রোহ : ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির বৃটিশ বিরোধী প্রথম সংগঠিত আন্দোলন

পুলিশ