হানাদার মুক্ত বাংলাদেশে প্রথম জনসভা হয়েছিলো ১১ ডিসেম্বর যশোরে

হানাদার মুক্ত বাংলাদেশে প্রথম জনসভা হয়েছিলো ১১ ডিসেম্বর যশোরে , আগামীকাল ১১ ডিসেম্বর। জাতীয় জীবনের স্মরণীয় একটি দিন। শুধু যশোর নয় দেশবাসীর জন্যে দিনটি গৌরবের। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কবলমুক্ত বাংলাদেশের মাটিতে এইদিনে যশোর টাউন হল ময়দানে অনুষ্ঠিত হয় বিজয় জনসভা সমাবেশ।

হানাদার মুক্ত বাংলাদেশে প্রথম জনসভা হয়েছিলো ১১ ডিসেম্বর যশোরে

হানাদার মুক্ত বাংলাদেশে প্রথম জনসভা হয়েছিলো ১১ ডিসেম্বর যশোরে

মুক্ত বাংলার প্রথম এই জনসভায় উপস্থিত ছিলেন- প্রবাসী সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ, মন্ত্রী ক্যাপ্টেন মনসুর আলী, ফনিভুষণ মজুদার, সোহরাব হোসেন, ব্যরিস্টার আমিরুল ইসলাম, চরমপত্র পাঠক এম আর আকতার মুকুল, চলচ্চিত্রকার জহির রায়হান, অভিনেতা সৈয়দ হাসান ইমাম প্রমুখ।

সেদিনের সমাবেশে প্রবাসী সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশের ১ কোটি শরণার্থীকে আশ্রয় এবং স্বাধীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্যে ভারতের তৎকালিন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। ওই সমাবেশ থেকে তিনি বাংলাদেশের স্বীকৃতি দেয়ার জন্যে বিশ^ নেতাদের প্রতি আহবান জানান। এছাড়াও  প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ সমবেত জনতার উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, আর ধ্বংশ নয়, যুদ্ধ নয়।

হানাদার মুক্ত বাংলাদেশে প্রথম জনসভা হয়েছিলো ১১ ডিসেম্বর যশোরে

 

এই মুহূর্তে কাজ হল যুদ্ধ বিধ্বস্থ বাংলাদেশকে গড়ে তোলা। তিনি সর্বস্থরের মানুষকে স্বাধীনতা যুদ্ধের চেতনায় দেশ পুনর্গঠনে আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। সমাবেশ থেকে যশোরের তৎকালীন ডিসি ওয়ালি উল ইসলাম এবং কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাঞ্চন ঘোষালকে নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, আইন শৃঙ্খলায় যেন অবনতি না ঘটে। একই সাথে জনতাকে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। অপরাধী যেই হোক তাকে আইনের হাতে সোপর্দ করবেন। তাজউদ্দিন আহমেদ বলেছিলেন, স্বাধীন এই দেশে ধর্ম নিয়ে আর রাজনীতি চলবে না।

আর তাই জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম লীগ ও নেজামে ইসলামকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রওশন আলী পরিচালনা করেন তাজউদ্দিন আহমেদের রাজনৈতি সচিব আলী তারেক।

হানাদার মুক্ত বাংলাদেশে প্রথম জনসভা হয়েছিলো ১১ ডিসেম্বর যশোরে

মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন- যুদ্ধকালিন বৃহত্তর যশোর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা খান টিপু সুলতান, মুক্তিযোদ্ধা খুরশিদ আনোয়ার বাবুল (বর্তমানে আমেরিকা প্রবাসী), মুক্তিযোদ্ধা ভীম সেন, প্রবাসী সরকারের ফটোগ্রাফার আব্দুল হামিদ রায়হান, ফটোগ্রাফার মুক্তিযোদ্ধা মো. শফি প্রমুখ। এদের মধ্যে ব্যরিস্টার আমিরুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা খুরশিদ আনোয়ার বাবুল, অ্যাড, ভীম সেন বাদে সকলেই প্রয়াত।
বীর মুক্তিযোদ্ধা খুরশিদ আনোয়ার বাবুল স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উৎসবে অংশ নিতে এখন দেশে ফিরেছেন। সেদিনের স্মতিচারণ করে তিনি  বলেন, এই জনসভা যখন হয় তখন যশোরের আশপাশে যুদ্ধ চলছিল। জনসভা শেষে নেতৃবৃন্দ সড়ক পথে কোলকাতা চলে যান।

আরও দেখুনঃ

জনগণের ভাগ্য নিয়ে যেন কেউ না খেলে সেজন্য অতন্ত্র প্রহরী হবে আওয়ামী লীগ : প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশ