বর্ণাঢ্য আয়োজনে প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপন করছে বান্দরবানের বৌদ্ধ সম্প্রদায়, শুরু হয়েছে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা (মাহা ওয়াগ্যোয়াই পোয়েঃ)। ধর্মীয় ও সামাজিক এই উৎসবকে ঘিরে আনন্দ উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে পার্বত্য জেলা বান্দরবানে।
আষাঢ়ী পূর্র্ণিমার পরের দিন থেকে টানা তিনমাসের বর্ষাবাস শেষে বৌদ্ধ নর-নারীরা বিভিন্ন বৌদ্ধ মন্দিরে গিয়ে পঞ্চশীল, অষ্টশীল ও দশশীল গ্রহন করেন। প্রবারণা পূর্ণিমাকে মারমারা মাহা ওয়াগ্যোয়াই পোয়েঃ হিসেবে পালন করে থাকে। এসময় সকল অহিংসা ও পাপ কাজ থেকে বিরত থাকার মন্ত্রে দীক্ষিত হন বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মানুসারীরা।
এদিকে প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপন উপলক্ষে বুধবার সকাল থেকে বান্দরবানের বিভিন্ন বিহারে বিহারে চলছে ধর্মীয় প্রার্থনা। ভিক্ষুদের উদ্দেশ্যে অর্থ ও অন্নদান আর ফুল পূজাসহ চলছে নানা ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা। আর বিভিন্ন উপাসক-উপাসিকারা গ্রহণ করছেন সকাল থেকে অষ্টশীল ও দশশীল।
উপাসক-উপাসিকারা জানিয়েছেন, বিহারে বিহারে দেয়া হচ্ছে ধর্মীয় দেশনা। জগতের সকল প্রাণীর মঙ্গল কামনায় করা হচ্ছে বিশেষ প্রার্থনা। সুখ:শান্তি লাভ ও পারিবারিক সুস্থতার জন্য প্রার্থনায় জড়ো হচ্ছে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা। দায়ক-দায়িকারা মোমবাতি,ধুপকাটি প্রজ্জলন আর বৌদ্ধ ভিক্ষুদের ছোয়াইং (বিভিন্ন ধরনের খাবার) প্রদান করে দিনটি পালন করছে মহাআনন্দে।
বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের মতে প্রবারণা পুর্ণিমার দিনই রাজকুমার সিদ্বার্থের মাতৃগর্ভে প্রতিসন্দি গ্রহণ,গৃহত্যাগ ও ধর্মচক্র প্রবর্তন সংঘটিত হয়েছিল তাই প্রতিটি বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের কাছে দিনটি বিশেষভাবে স্মরণীয় হয়ে আছে আজও।
এদিকে বুধবার সন্ধ্যায় বান্দরবানের পুরাতন রাজবাড়ীর মাঠ থেকে একটি বিশাল রথ টেনে শহরের বিভিন্ন প্রান্ত ঘুরে বৌদ্ধ বিহারে নিয়ে রাখা হবে। আর এসময় রথ টানার পাশাপাশি, হাজার বাতি প্রজ্জলন, পিঠা উৎসব আর রং বেরংয়ের ফানুষ বাতি আকাশে উড়াবে পূণ্যার্থীরা।
বান্দরবান উৎসব উদযাপন পরিষদের সভাপতি থেওয়াং জানান, দুইদিনব্যাপী নানা ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে সাংগু নদীতে রথ বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের এই প্রবারণা উৎসবের ।
আরও দেখুনঃ
জয়পুরহাটে স্কাউটিং বিষয়ক ওরিন্টেশন কোর্স অনুষ্ঠিত