জেলার দাউদকান্দি দেশের অন্যতম প্লাবনভূমি। দাউদকান্দির প্লাবনভূমিতে বসন্ত গ্রীষ্মে ধান -বর্ষা হেমন্তে মাছ চাষ ।

দাউদকান্দির প্লাবনভূমি: সূত্রমতে, কুমিল্লার দাউদকান্দি, মুরাদনগর ও চান্দিনাসহ বিভিন্ন উপজেলার প্লাবন ভূমিতে মাছ চাষ করা হয়। তার মধ্যে অন্যতম দাউদকান্দি প্লাবন ভূমি। এখানের জমি প্রায় ৮ মাস পানির নিচে থাকে। তাই জমিতে ফসল ফলানো যায় না। এ সময় মাছ চাষ করা হয়।

উপজেলার প্রায় চার হাজার হেক্টর জমিতে মাছ চাষ করা হয়। শুষ্ক মৌসুমে কিছু কৃষক ধান চাষ না করে ফেলে রাখতেন। সেই সব কৃষকরাও ধান চাষে ঝুঁকছেন। এবার দাউদকান্দির সাত হাজার ৪৩ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ করা হয়।
সরেজমিন উপজেলার পুটিয়া ও আদমপুর গিয়ে দেখা যায়, দাউদকান্দি উপজেলার ইলিয়টগঞ্জ উত্তর ও দক্ষিণ ইউনিয়নে বেশি প্লাবনভূমি। সেখানে এবার ধান চাষ বাড়ছে। মাঠের পর মাঠ সবুজ ফসলের হাসি।

কৃষকরা ব্যস্ত জমির আগাছা পরিষ্কারে। কেউ পাশের ডোবা থেকে সেওতি (পানি সেচের দেশীয় পদ্ধতি) দিয়ে পানি সেচ দিচ্ছেন।
সিঙগুলা গ্রামের কৃষক মানিক দাস বাসসকে বলেন, তিনি আড়াই বিঘা জমিতে ধান চাষ করছেন।
মাছ চাষের কারণে জমি উর্বর থাকে। ওই জমিতে ধান চাষ করলে সার দিতে হয় না। জমি নাঙ্গল বা ট্রাক্টর দিয়ে চাষ করতে হয় না। জমিতে আগাছাও কম হয়। অনেকে আগে জমি ফেলে রাখতো। এখন তারা ধান চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।

মৎস্য উদ্যোক্তা আলী আহমেদ মিয়াজী বলেন, দাউদকান্দি অঞ্চলে ৮৮টি মাছের খামার রয়েছে। তার মধ্যে ৭/৮টি বাদ দিলে আর সব গুলোতে শুষ্ক মৌসুমে ধান চাষ করা হয়।
বর্ষা মৌসুমে মাছ চাষ করা হয়। ধানের বর্তমানে ভালো মূল্য পাওয়া যাচ্ছে। তাই অনেকে ধান চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। মাছের পর ধান চাষ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন।
দাউদকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সারোয়ার জামান বলেন, মাছ চাষের কারণে দীর্ঘ সময় জমি অ্যবহৃত থাকে। তাই জমি উর্বর হয়। মাছের পর ধান চাষ করলে সার দিতে হয় না।
মূলত প্লাবনভূমির সংজ্ঞা হচ্ছে, জমি ডুবে গেলে মাছ চাষ, ভেসে উঠলে ধানসহ অন্যান্য ফসল চাষ করবে। এ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই এখানের কৃষকরা ধান ও মাছ করায় লাভবান হতে পারছে।