ডেঙ্গু হলে যে সকল খাবার খাবেন ও খাবেন না , ডেঙ্গু জ্বর হবার কারন এক ধরনের মশা, যাকে এডিস মশা বলে। জ্বরের জীবাণু বহন করছে, এরকম কোন মশা, কোনো ব্যক্তিকে কামড়ালে, সেই ব্যক্তি তখনই ডেঙ্গুর জিবানু আক্রান্ত হবে। তবে সেই ব্যক্তির জ্বর আসতে পারে চার থেকে ছয় দিনের মধ্যে। এবার এই আক্রান্ত ব্যক্তিকে কোনো জীবাণুবিহীন এডিস মশা কামড়ালে সেই মশাটি জ্বরের জীবাণুবাহী মশায় পরিণত হয়। এভাবে একজন থেকে অন্যজনে মশার মাধ্যমে ডেঙ্গু ছড়িয়ে থাকে।

Table of Contents
ডেঙ্গুজ্বরে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে শরীরে যেন পানিশূণ্যতা না হয়। এ সময় দেহে পানির সমতা বজায় রাখার জন্য পর্যাপ্ত পানি ও ভিটামিন সি জাতীয় ফলের শরবত খেতে হবে।
দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে ডেঙ্গু জ্বর একটি ভয়াবহ বিষয় হিসেবে দেখা দিয়েছে। এই জ্বরের লক্ষণগুলো সাধারণত সংক্রমণের তিন থেকে ১৪ দিন পরে শুরু হয়। এরমধ্যে থাকে জ্বর, মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব, পেশিতে ব্যথা এবং ত্বকে র্যাশ ওঠা।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদনে কলম্বিয়া, এশিয়া রেফারেল হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ পবিত্র সেন রাজ বলেছেন, একটি মশা যখন ডেঙ্গু এর ভাইরাসে আক্রান্ত কোন ব্যক্তিকে কামড় দেয় তখন ভাইরাসটি মশার মধ্যে প্রবেশ হয়ে জায়। সংক্রামিত মশা যখন অন্য ব্যক্তিকে কামড় দেয় তখন ভাইরাসটি সেই ব্যক্তির রক্ত প্রবাহে প্রবেশ করে। তাই এসব খাবার শরীর এর দূষিত বর্জ্য পদার্থ বের করে শরীরের আর্দ্রতাকেও বজায় রাখতে রাখে পারে। ডাব রয়েছে প্রচুর পরিমাণ পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, ফসফরাস এবং আয়রন রয়েছে। দেহের স্নায়বিক জটিলতা, অন্ত্রের তারল্য ও কোষের জলীয় শোষণের সমতা বজায় রাখে ডাব। তাই ডেঙ্গুজ্বরে ডাব খুবই উপকারি।
ডেঙ্গু জ্বরের উপসর্গগুলো দেখা দিলে অতি দ্রুত ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে। তবে ডেঙ্গু জ্বর হলে আপনাকে খাবারের প্রতিও বিশেষভাবে মনযোগী হতে হবে। বিশেষজ্ঞরা জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের সহায়তা করার জন্য কয়েটি খাবার খেতে পরামর্শ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে কয়েকটি খাবার এড়িয়ে যেতেও বলেছেন। দেখে নিন, কোন খাবারগুলো খাবেন আর কোন খাবারগুলো এড়িয়ে যাবেন।
যে খাবারগুলো বেশি করে খাবেন :
কমলা: কমলা ও কমলার রস ডেঙ্গু জ্বরে ভালো কাজে আসতে পারে। কারণ এটিতে রয়েছে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিওক্সিডেন্ট। আর এই দুটি উপাদান রোগীর জ্বর নিয়ন্ত্রণে ভালো কাজ করে।

ডালিম: ডালিমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন। সেই সঙ্গে এতে রয়েছে পরিমাণ মতো মিনারেল। যদি আপনি নিয়ম করে ডালিম খান তাহলে বেড়ে যাবে প্লেটলেটের সংখ্যা। এই উপকারী ফলটি খেলে ক্লান্তি আর অবসাদক অনুভূতিকেও দূর হবে। প্রাচীন কাল থেকে এই ফলটি রোগ নিরাময়ের পথ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে আসছে।
ডাবের পানি: রোগীর শরীরে তরল পদার্থের শূন্যতা সৃষ্টি হয়। সৃষ্টি হয় ডিহাইড্রেশন। এ সময় বেশি বেশি করে ডাবের পানি পান করলে উপকার পাওয়া যাবে। কেননা ডাবে রয়েছে ইলেক্ট্রোলাইটসের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি।
পেঁপে পাতার জুস: রোগীর একটি কমন সমস্যা শরীরে প্লেটলেট কাউন্ট বা সংখ্যা কমে যাওয়া। পেঁপে গাছের পাতা প্লেটলেট বাড়াতে কাজে লাগে। তাই এ সময় আপনার উপকার করতে পারে পেঁপে পাতা। পেঁপে পাতায় আছে পাপাইন এবং কিমোপেইনের মতো এনজাইম, যা আপনার হজমেও সহায়তা করে। আর প্লেটলেটের পরিমাণ বাড়ানোর কাজটি তো করবেই। সেজন্য প্রতিদিন আপনি ঘরেই নিয়ম করে ৩০ এমএল পেঁপের পাতার তৈরি জুস খেতে হবে। আপনার নিজের ঘরে বসেই খুব সহজে তৈরি করে নিতে পারেন পেঁপের জুস।
হলুদ: এই জ্বরে জন্য কাজে আসতে পারে হলুদও। এর জন্য আপনাকে একটি গ্লাস দুধের সঙ্গে এক চিমটি হলুদ মিশিয়ে পান করতে হবে। এটি আপনাকে অতি দ্রুত সুস্থ্য করে তুলতে পারবে।
মেথি: এই জ্বর হলে কাজে আসবে মেথি। এটি আপনাকে অতি সহজে ঘুমিয়ে যেতে সহায়তা করেবে। সেই সঙ্গে সহয়তা করবে অতিরিক্তমাত্রার জ্বর কমিয়ে আনতে। তবে মেথি গ্রহণ করার পূর্বে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরমার্শ করে নিতে হবে।

ব্রুকলি: ব্রুকলি হলো ভিটামিন কে’র একটি ভালো উত্স। অন্যদিকে ভিটামিন কে রক্তের প্লেটলেট বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং খনিজ সমৃদ্ধ। তাই আপনি যদি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন; তাহলে ব্রুকলি যেগাড় করতে চেষ্টা করুন। সম্ভব হলে বেশি করে ব্রুকলি খান।
পালংশাক: পালংশাকে প্রচুর পরিমাণে আইরন এবং ওমেগো-থ্রি ফ্যাটি এসিড পাওয়া যায়। এটি আবার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করেতে সহায়তা করে। এই শাকটি বেশি করে গ্রহণ করলে অতি দ্রুত প্লেটলেট বৃদ্ধি পায়।
কিউই ফল: কিউইফলটিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন পাওয়া যায়। সেই সঙ্গে এটিতে পটাশিয়ামও রয়েছে। এই ফলটি বেশি খাওয়ার ফলে ইলেক্ট্রোলাইট স্তর এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। এ ফলটি খেলে লোহিত রক্ত কণিকার মাত্রা বৃদ্ধি পায়।
ডেঙ্গু জ্বরের সময় যে খাবারগুলো এড়িয়ে চলবেন :
তৈলাক্ত ও ভাজা: তেলযুক্ত ও ভাজা খাবর সব সময় এড়িয়ে চলা দরকার। তবে যখন ডেঙ্গু আক্রান্ত হবেন, তখন অবশ্যই তৈলাক্ত ও ভাজা খাবরগুলো খাবেন না। যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। তাছাড়া আপনি যদি এই খাবারগুলো খান তবে আপনার উচ্চ রক্তচাপ সমস্যা হতে পারে পারে।
মসলাযুক্ত খাবার: ডেঙ্গু রোগীকে অবশ্যই মসলাযুক্ত খাবারগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। এই ধরনের খাবার বেশি করে খেলে পাকস্থলীর দেয়াল নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
ক্যাফিনযুক্ত পানীয়: ডেঙ্গু হলে তরল খাবার বেশি করে খেতে হবে। সেই সঙ্গে ক্যাফিনযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলতে হবে। এই খাবারগুলো হার্ট রেট বাড়িয়ে দিতে পারে। সেই সঙ্গে ক্লান্তি নিয়ে আসতে পারে।
এ বিষয়ে আমাদের অন্যান্য আর্টিকেল:
- বাংলাদেশের খবর : ডেঙ্গু পরিস্থিতি উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, মারা গেছেন বয়সী পুরুষ!
- বাংলাদেশের খবর : শিক্ষার্থীদের জন্য এডিস মশা মুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে ৩ তিনদিনের বিশেষ কর্মসূচি
এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে:
- উইকিপিডিয়া : ডেঙ্গু জ্বর
- উইকিপিডিয়া : এডিস মশা
বাংলাদেশের খবর সাইটটি ব্যবহার করায় আপনাকে ধন্যবাদ। আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে “যোগাযোগ” আর্টিকেলটি দেখুন, যোগাযোগের বিস্তারিত দেয়া আছে।
Comments are closed.