ডলারের দাম বৃদ্ধি অস্থিতিশীল হতে পারে বাজার

বাংলাদেশ প্রতিবছর পণ্য আমদানি হয় প্রায় চার হাজার কোটি ডলারেরও বেশি। এর মধ্যে রয়েছে চাল, ডাল, তেল, চিনি এবং শিশুখাদ্য থেকে শুরু করে নিত্য ব্যবহার্য এবং দেশের উৎপাদন খাতের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পণ্য। গত সপ্তাহে- ডলারের দাম আরেক দফা বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বাভাবিকভাবে বাড়বে এসব পণ্যের আমদানি ব্যয়। যার বিরূপ প্রভাব পড়বে নিত্যপণ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের বাজারে। ডলারের

গত এক সপ্তাহে নগদ ডলারের-দাম ৪০ পয়সা বেড়ে, এখন প্রায় ৮৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া, এলসির (লেটার অব ক্রেডিট) দর ০.৩০ পয়সা বেড়ে এখন প্রায় ৮৫.২৫ টাকায় পৌঁছেছে। ডলারের-দাম বৃদ্ধির জন্য আমদানি বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি প্রবাসী আয় প্রবাহ কমে যাওয়াকে চিহ্নিত করেছেন সংশ্লিষ্টরা। ক্রমেই-ডলারের দাম বৃদ্ধিতে চাপের মুখে পড়েছেন আমদানিকারকরা।

বাংলাদেশ ফুড স্টাফ অ্যান্ড সাপ্লাইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন-বাফিসার সভাপতি এবং বসুমতি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিএম গোলাম নবী বলেন, ‘বাফিসার অধীনে আমরা শিশুখাদ্য, ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিশেষ ধরনের ফুড সাপ্লিমেন্ট থেকে শুরু করে অসংখ্য পণ্য আমদানি করে থাকি।ডলারের দাম বৃদ্ধির ফলে নিশ্চিতভাবেই এসব পণ্যের দাম বাড়বে।’ তিনি আরো বলেন, ‘ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন হলে আমদানি ব্যায় দুদিক থেকে বেড়ে যায়। একদিকে পণ্যের দামও বৃদ্ধি পায়।

অন্যদিকে, আমদানিকৃত পণ্যের অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু যখন টাকার অঙ্কে হয় তখনো দাম বেড়ে যাবে। ফলে স্থানীয় বাজারে এর প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।’ সংশ্লিষ্টদের মতে, দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল হওয়ার কারণে ডলারের-দাম বাড়ছে। গত জুডলারেরলাইয়ে আমদানি ব্যয় ২১.৬৩ শতাংশের উচ্চগতি লক্ষ্য করা যায়, সে তুলনায় রপ্তানিতে হয় ১০.৫৪ শতাংশের নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি। যা ভূমিকা রাখে-ডলারের-দাম ও চাহিদা বৃদ্ধি ফলে মুদ্রা বাজার সংকটের।

গত অর্থবছরের (২০২০-২১) প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্টে) রেমিট্যান্স ৫০ শতাংশের রেকর্ড প্রবৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেলেও চলতি অর্থবছরের (২০২১-২২) একইসময়ে রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধি ১৯ শতাংশ কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম জানান, করোনাভাইরাসের টিকার এলসি মূল্য পরিশোধ ও সাম্প্রতিক সময়ে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি বেড়ে যাওয়ায় দেশের বাজারে ডলারের-চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে, সে তুলনায় রপ্তানির পরিমাণ বাড়েনি। বাড়লে ডলারের-মূল্য স্বাভাবিক অবস্থানে ফিরে আসবে।

গত আগস্ট মাস থেকে টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বাড়তে শুরু করে। আগস্টে আন্তঃব্যাংক লেনদেনে ডলারের দাম বেড়েছে ৪০ পয়সা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্ধারণ করা আন্তঃব্যাংক ডলার বিনিময় রেট এখন ৮৫.২০ টাকা । এই বছর আগস্ট পর্যন্ত ডলারের দাম স্থিতিশীল ছিল ৮৪.৮০ টাকায় । ডলারের

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, আমদানি দায় মেটাতে ব্যবসায়ীদের থেকে দেশি ও বিদেশি খাতের বেশিরভাগ ব্যাংক প্রতি ডলারে ৮৫.২৫ টাকা করে নিচ্ছে। তবে নগদ ডলারের মূল্য বেশিরভাগ ব্যাংকে ৮৭ টাকার ওপরে রয়েছে। কয়েকটি ব্যাংক নগদ ডলার ৮৮.৫০ পয়সা দরেও বিক্রি করছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গত ২ সেপ্টেম্বরের তথ্য অনুসারে, ব্যাংকগুলোর ঘোষিত মুদ্রা বিনিময় হার অনুযায়ী, নগদ ডলারের দর সবচেয়ে বেশি উঠেছে ব্র্যাক ব্যাংক, এনআরবিসি ও আইসিবি ইসলামী ব্যাংকে। ব্যাংকগুলোর নগদ ডলারের দর ছিল ৮৮ টাকা ৫০ পয়সা। এছাড়া, বেশিরভাগ ব্যাংকই ৮৭ টাকা থেকে ৮৮ টাকায় ডলার বিক্রি করছে।

আরও নিউজ দেখতে চাইলেঃ

BNP is now trying to heat up the political arena by shouting – Quader

Comments are closed.