চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে করোনার আরটিপিসিআর পরীক্ষা ১ জানুয়ারি শুরু, চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে ১ জানুয়ারি থেকে করোনা ভাইরার সংক্রমণ পরীক্ষা শুরু হবে। অনুমোদনপ্রাপ্ত চারটি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরি আরটিপিসিআর পরীক্ষার জন্য ইতিমধ্যে বিমানবন্দরের বরাদ্দকৃত স্থানে মেশিন স্থাপনসহ আনুষঙ্গিক প্রস্তুতি নিচ্ছে।
চট্টগ্রামের বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর আজ সকালে বাসস’কে জানান, ‘দুবাইসহ সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) যাত্রার ক্ষেত্রে ছয় ঘণ্টার মধ্যে আরটিপিসিআর রিপোর্ট নেয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আবার ইউএই’তে এ অঞ্চলের বিপুল সংখ্যক মানুষ কর্মরত রয়েছেন। কিন্তু চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আরটিপিসিআর রিপোর্ট পাওয়ার সুযোগ না থাকায় সবাইকে ঢাকা হয়েই ইউএই যেতে হতো। বিদেশগামীদের ভোগান্তির কথা বিবেচনা করে সরকার গত ৫ ডিসেম্বর শাহ আমানত বিমান বন্দরে করোনা পরীক্ষার জন্য চারটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন দেয়।
সরকারের অনুমোদনের পরপরই চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য বিভাগ বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সাথে বসে স্থান নির্ধারণ করে। ২৩ ডিসেম্বর অনুমোদনপ্রাপ্ত ল্যাব ও বিমান বন্দরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করে স্বাস্থ্য বিভাগ। অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে বৈঠকের মাধ্যমে তাদের চাহিদা নিরূপণ করা হয়। ’ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর বাসস’কে আরো জানান, ‘শাহ আমানত বিমানবন্দরের জন্য অনুমোদনপ্রাপ্ত চারটি ল্যাবের মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রামের শেভরন ক্লিনিক্যাল ল্যাবেটরি, ঢাকার প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট ও ল্যাব এইড এবং কুমিল্লার মডার্ন হসপিটাল প্রাইভেট লিমিটেড। বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক আগমন অংশে গত ১৮ ডিসেম্বর থেকে ল্যাবের অবকাঠামোগত কাজ শুরু হয়। ইতিমধ্যে ওয়েটিং রুম, স্যাম্পল কালেকশন রুম ও পাঁচটি বুথসহ আনুষঙ্গিক কাজ শেষ হয়েছে।
আগামী ২৯ ও ৩০ ডিসেম্বর দুইদিন পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চলবে। নববর্ষের প্রথম দিনেই আরটিপিসিআর টেস্ট পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হবে। ফলে এ অঞ্চলের বিশাল জনগোষ্ঠীকে ইউএই যাত্রার আগে আর ঢাকায় দৌড়াতে হবে না। তাদের ভোগান্তির অবসান ঘটবে।’
জানা গেছে, চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে করোনা পরীক্ষা কার্যক্রম তদারকিতে ৬ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর, ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবের ইনচার্জ ডা. শাকিল আহমেদ, সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী ও বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপককে নিয়ে একটি তত্ত্বাবধান কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার ও বিআইটিআইডি ল্যাব ইনচার্জ ডা. শাকিল আহমেদ প্রথম একমাস নিজেরাই এখানকার পরীক্ষা কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করবেন।
এদিকে, চট্টগ্রাম থেকে অনুমোদনপ্রাপ্ত শেভরন ক্লিনিক্যাল ল্যাবেটরি প্রা. লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার পুলক পাড়িয়াল আজ সকালে বাসস’কে জানান, ‘বিমানবন্দরে করোনা পরীক্ষার জন্য আমাদের প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। আশা করি, অপর তিনটি প্রতিষ্ঠানও এর মধ্যে তৈরি হয়ে যাবে। আশা দুইদিন ট্রায়ালের পর বছরের প্রথম দিন থেকে আমরা যাত্রীদের সেবা দিতে পারবো। বিমানবন্দরে আরটিপিসিআর টেস্টের জন্য প্রতিজন যাত্রীকে ১৬০০ টাকা করে দিতে হবে। আর প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কার্ডধারী (শ্রমিক শ্রেণী) যাত্রীদের ফি মন্ত্রণালয় থেকে দেয়া হবে।’
জানা গেছে, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ইন্টারন্যাশনাল এরাইভাল অংশে প্রায় ২ হাজার বর্গফুটের স্থান নির্ধারণ করেছে। এর মধ্যে ল্যাব ও স্যাম্পল কালেকশনের স্থানটি ১৪০০ বর্গফুট। অপেক্ষা কক্ষটি ৫শ বর্গফুটের বেশি। পুলক পাড়িয়াল বলেন, ‘আরেকটু বড় জায়গা পেলে ভালো হতো। কিন্তু এর চেয়ে বেশি স্পেস দেয়ার সুযোগ শাহ আমানত কর্তৃপক্ষের ছিল না। এ সীমাবদ্ধতা মেনেই সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। হয়তো কিছু মেশিন শেয়ারিং করতে হতে পারে।’
আরও দেখুনঃ