চট্টগ্রামে করোনাভাইরাস সংক্রমণ কমতে শুরু করেছে

চট্টগ্রামে করোনাভাইরাস সংক্রমণ হার আবার পাঁচের নীচে নেমেছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণ হার নির্ণিত হয় ৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ এবং নতুন ১১৯ জন আক্রান্ত শনাক্ত হন। এ দিন শহর ও গ্রামে কোনো করোনা রোগির মৃত্যু হয়নি।

চট্টগ্রামে করোনার সংক্রমণ কমতে শুরু করেছে

চট্টগ্রামে করোনাভাইরাস সংক্রমণ:জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রেরিত চট্টগ্রামের করোনা সংক্রান্ত হালনাগাদ পরিস্থিতি নিয়ে আজকের প্রতিবেদনে এ সব তথ্য জানা যায়।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, গতকাল বুধবার ফৌজদারহাট বিআইটিআইডি,শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, নগরীর এগারো ল্যাব ও এন্টিজেন টেস্টে চট্টগ্রামের ২ হাজার ৫১০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়।

নতুন শনাক্ত ১১৯ জনের মধ্যে শহরের ৮৫ জন এবং তেরো উপজেলার ৩৪ জন। জেলায় এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ১ লাখ ২৫ হাজার ৭৮৬ জন।

চট্টগ্রামে করোনার সংক্রমণ কমতে শুরু করেছে

সংক্রমিতদের মধ্যে শহরের ৯১ হাজার ৪৬৫ ও গ্রামের ৩৪ হাজার ৩২১ জন। উপজেলা পর্যায়ে শনাক্ত ৩৪ জনের মধ্যে মিরসরাইয়ে ৭, ফটিকছড়িতে ৫, সীতাকু- ও বোয়ালখালীতে ৪ জন করে, পটিয়ায় ৩ জন, রাঙ্গুনিয়া, হাটহাজারী ও সাতকানিয়ায় ২ জন করে এবং লোহাগাড়া, বাঁশখালী, চন্দনাইশ, আনোয়ারা ও রাউজানে একজন করে রয়েছেন।

গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় শহর ও গ্রামে কেউ মৃত্যুবরণ করেন নি। জেলায় মোট মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ৩৬২ জনই রয়েছে। এর মধ্যে ৭৩৪ শহরের ও ৬২৮ জন গ্রামের।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে এক মাস সাত দিন পর করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হার পাঁচের নিচে নেমেছিল ১৩ ফেব্রুয়ারি। এদিন ১০৭ জন নতুন আক্রান্ত শনাক্ত হন। সংক্রমণ হার ছিল ৪ দশমিক ৯৬ শতাংশ।

চট্টগ্রামে করোনার সংক্রমণ কমতে শুরু করেছে

এ সময়ে করোনায় আক্রান্ত কারো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায় নি। তবে মাঝের দুই দিন এ হার পাঁচ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। ১৪ ফেব্রুয়ারি ১৮৮ জনের সংক্রমণ ধরা পড়ে। সংক্রমণের হার ছিল ৬ দশমিক ৩১ শতাংশ। কোনো করোনা রোগির মৃত্যু হয়নি।

১৫ ফেব্রুয়ারি সংক্রমণ হার ছিল ৫ দশমিক ৯৩ শতাংশ। এদিন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ২ জনের মৃত্যু ঘটে এবং ১৬৫ জন নতুন বাহক চিহ্নিত হন।

ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরি এশিয়ান স্পেশালাইজড হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ৪১৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এখানে শহরের ৩ জন জীবাণুবাহক চিহ্নিত হন।

ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে ৩৭৬ জনের নমুনায় শহরের ৩১ ও গ্রামের ১৭ জনের রেজাল্ট পজিটিভ আসে।

চট্টগ্রামে করোনার সংক্রমণ কমতে শুরু করেছে

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ল্যাবে ৭৭টি নমুনার মধ্যে শহরের ৪ ও গ্রামের ৩টিতে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ২৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে গ্রামের ৩ জনের দেহে সংক্রমণ ধরা পড়ে। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে পরীক্ষিত ৮৯টি নমুনায় শহরের ১৩ ও গ্রামের একটি আক্রান্ত শনাক্ত হয়।

আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের রিজিওনাল টিবি রেফারেল ল্যাবরেটরিতে ৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে সবক’টিরই নেগেটিভ রেজাল্ট আসে। নমুনা সংগ্রহের বিভিন্ন কেন্দ্রে ৯৭ জনের এন্টিজেন টেস্টে গ্রামের ৪ জনকে আক্রান্ত বলে জানানো হয়।

 

বেসরকারি পরীক্ষাগারগুলোর মধ্যে শেভরনে ৩৫১ জনের নমুনায় শহরের ৮ ও গ্রামের ৩ জন সংক্রমিত চিহ্নিত হন। ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ল্যাবে ২৭১টি নমুনার মধ্যে শহরের ৬টিতে জীবাণুর অস্তিত্ব মিলে।

চট্টগ্রামে করোনার সংক্রমণ কমতে শুরু করেছে

আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে ২৪০ জনের নমুনা পরীক্ষায় শহরের ৬ জনের দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়। এপিক হেলথ কেয়ারে ৩৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হলে শহরের ৩টিতে করোনার জীবাণু পাওয়া যায়।

মেট্রোপলিটন হাসপাতাল ল্যাবে ৮০ জনের নমুনা পরীক্ষায় শহর ও গ্রামের ৩ জন করে আক্রান্ত পাওয়া যায়। শাহ আমানত বিমানবন্দর ল্যাবে ৩৯৮ বিদেশ যাত্রীর নমুনার মধ্যে শহরের ৫ জনের রিপোর্ট পজিটিভ হওয়ায় তাদের যাত্রা বাতিল করা হয়। করোনা পরীক্ষায় নতুন যুক্ত এভারকেয়ার হসপিটাল ল্যাবে ৪৬টি নমুনায় শহরের ৩টিতে সংক্রমণ ধরা পড়ে।

এদিন চট্টগ্রামের জন্য নির্ধারিত ১৭ ল্যাবরেটরির মধ্যে নগরীর মেডিকেল সেন্টার হাসপাতাল ও ল্যাব এইডে কোনো নমুনা পরীক্ষা করা হয়নি। কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ল্যাবেও চট্টগ্রামের কোনো নমুনা পাঠানো যায়নি।

চট্টগ্রামে করোনার সংক্রমণ কমতে শুরু করেছে

ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে সংক্রমণ হার পাওয়া যায়, এশিয়ান স্পেশালাইজড হাসপাতালে ০ দশমিক ৭১ শতাংশ, বিআইটিআইডি’তে ১২ দশমিক ৭৬, চমেকহা’য় ৯ দশমিক ০৯, চবি’তে ১১ দশমিক ১১, সিভাসু’তে ১৫ দশমিক ৭৩, আরটিআরএলে ০ শতাংশ, শেভরনে ৩ দশমিক ১৩, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ২ দশমিক ২১, আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে ২ দশমিক ৫০, এপিক হেলথ কেয়ারে ৮ দশমিক ১১, মেট্রোপলিটন হাসপাতালে ৭ দশমিক ৫০, শাহ আমানত বিমানবন্দর ল্যাবে ১ দশমিক ২৫ ও এভারকেয়ার হসপিটাল ল্যাবে ৬ দশমিক ৫২ এবং এন্টিজেন টেস্টে ৪ দশমিক ১২ শতাংশ।

আরও দেখুনঃ

হবিগঞ্জের কোরবানীর হাটের আকর্ষণ রাজা ও বাদশা

বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এর টিকাদান কার্যক্রম