আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক (জন্ম: ১ অক্টোবর ১৯৪৬) হলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন রাজনীতিবিদ। তিনি বর্তমানে গাজীপুর-১ আসনের সাংসদ ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী।
Table of Contents
আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক [ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী ]
সংবিধান অনুযায়ী দশম জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে ৩ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে একাদশ সংসদের সংসদ সদস্য হিসেবে তিনি শপথবাক্য পাঠ করেন।
প্রারম্ভিক জীবন
আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক ১৯৪৬ সালের ১লা অক্টোবর গাজীপুর সদর উপজেলার দাখিণ খান গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতার নাম আনোয়ার আলী ও মাতার নাম রাবেয়া খাতুন।
রাজনীতি ও কর্মজীবন
আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি সক্রিয় রাজনীতির সাথে জড়িত। ১৯৭৬ সাল থেকে বর্তমান পর্যমত্ম দীর্ঘ ৩৮ বছর তিনি গাজীপুর জেলা শাখা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক ছাত্রাবস্থায় পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও সহ-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি তৎকালীন গাজীপুর মহকুমা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
স্থানীয় সরকার পরিচালনায় তিনি বিশেষ দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছেন ১৯৭৩ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যমত্ম তিনি ৩ বার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান।
১৯৮৯ থেকে ২০০৮ সাল পর্যমত্ম ৪ বার পৌর চেয়ারম্যান ও মেয়র নির্বাচিত হন। বহুবার তিনি দেশের শ্রেষ্ঠ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও ১৯৯৬ ও ২০০৩ সালে শ্রেষ্ঠ পৌর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
২০০৮ সালে পৌর মেয়রের পদ থেকে পদত্যাগ করে গাজীপুর-১ আসন থেকে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়ী হন। এরপর ২০১৪ ও ২০১৯-ও সালে গাজীপুর-১ আসন থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিজয়ী হন।
এ সময় তিনি সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।তিনি ১১ ডিসেম্বর ২০১৮ থেকে ৬ জানুয়ারি ২০১৯ পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারের ধর্মমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালযয়ের মন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত রয়েছেন।
আ.ক.ম মোজাম্মেল হক শিক্ষা ও সমাজ সেবামূলক অসংখ্য কর্মকান্ডে জড়িত আছেন তিনি সরকারি সফরে এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপের বহু দেশে ভ্রমন করেছেন।
মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি গাজীপুরের মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে কাজ করেন। ১৯৭১ সালের ১৯ মার্চ গাজীপুরে সর্বপ্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধে তিনি সশস্ত্র প্রতিরোধ কমিটির আহবায়ক হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে ব্রিগেডিয়ার জাহান জেবের বিরুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন।
প্রাপ্তি ও পুরস্কার
আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক ২০১৯ সালে বাংলাদেশের জাতীয় এবং সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার স্বাধীনতা পুরস্কার পান। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতা পুরস্কার বিভাগে তিনি এ পুরস্কার প্রাপ্ত হন।
২০১৯ সালের ১৫ই ডিসেম্বর সংবাদ সম্মেলন করে ১০ হাজার ৭৮৯ জন ‘স্বাধীনতাবিরোধী’ রাজাকারের তালিকা প্রকাশ করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রালয়ের মন্ত্রী আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক।
কিন্তু ওই তালিকায় গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ পরিবারের সদস্যদের নাম আসায় ক্ষোভ ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে সংশোধনের জন্য উক্ত তালিকা স্থগিত করা হয়।
২০২১ সালের প্রথম দিকে বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এর বৈশ্বিক মহামারী চলাকালে আ. ক. ম. মোজাম্মেল হকের টিকা নেয়ার এক মিনিট ৩৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
সেখানে তাকে টিকা নেয়ার অভিনয় করতে দেখার ঐ ভিডিওটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর ব্যবহারকারীরা নানারকম মন্তব্য করতে শুরু করেন।
পরবর্তীতে আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক জানান প্রথমে টিকা নেয়ার পর একজন সাংবাদিকের অনুরোধে ভিডিও করতে দেয়ার জন্য তিনি আবার টিকা নেয়ার অভিনয় করেছিলেন।
আরও দেখুনঃ